ফেনী সদর ও দাগনভূঞায় নতুন করে অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে এসব এলাকার বাসিন্দারা।
এছাড়া টানা বর্ষণে জেলা শহরের বিভিন্ন সড়ক ডুবে থাকায় তৃতীয় দিনের মতো পানিবন্দি রয়েছে শহরের বেশিরভাগ এলাকার মানুষ।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রমজান আলি প্রমানিক জানান, ভারি বর্ষণ ওিউজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে ফুলগাজীর মুহুরী নদীর পানি সোমবার সকালে বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
“পাঁচটি স্থানে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় নতুন করে আরও পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত হয়ে হয়েছে।”
এদিকে ছোট ফেনী নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় ফেনী সদর ও দাগনভূঞা উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
দাগনভূঞা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা জামশেদ খোন্দকার জানান, সিন্দুরপুর ইউনিয়নের ১০টি ও রাজাপুর ইউনিয়নের ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
বন্যার পানিতে উপজেলার পূর্বচন্দ্রপুর, রামনগার, মাতুভূঞা, ইয়াকুব পুর, জায়লস্করের অন্তত ২০ গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে বলে তিনি জানান।
তিনি জানান, এতে এসব গ্রামের নিচু এলাকার ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। উপজেলার ৮টি স্কুলে বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় শিক্ষা কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে।
“পাঁচ শতাধিক মাছের ঘের ভেসে গেছে। বিস্তীর্ণ জমিতে পানি জমে বোর ধানের চারা ডুবে গেছে।”
ফেনী সদরের পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মানিক জানান, পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের নুনের গোলা, ডুমুর গাঁও, বিরুলি, আবুপুর গ্রামে পানিবন্দি হয়ে দিন কাটাচ্ছে হাজারো পরিবার।
ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন জানান, মুহুরী নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় মঙ্গলবার ৪শ পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হবে।
এদিকে টানা বর্ষণে তৃতীয় দিনের মতো পানিবন্দি রয়েছে ফেনী শহরবাসী।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়ক ও একাডেমি সড়কে হাঁটু পানি থাকায় যান চলাচলে সমস্যা হচ্ছে।
এছাড়া এসব সড়ক সংলগ্ন ডাক্তার হায়দার ক্লিনিক সড়ক, রামপুর ভূঞা বাড়ি সড়ক, কলাবাগান, শান্তি কোম্পানী সড়ক, ডাক্তার পাড়া, বারাহীপুর, খাজুরিয়া, মধুপুর, কমার্স কলেজ সড়কসহ শহরের বিভিন্ন সড়ক প্লাবিত হয়েছে।
জেলা আবহওয়া কর্মকর্তা মো. কবির হোসেন জানান, আবহওয়া অফিস রোববার সকাল ৬টা থেকে সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ফেনীতে ১৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কুমিল্লা অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মোসাদ্দেক হোসেন জানান, পানি না কমা পর্যন্ত ফুলগাজীতে বাঁধের ভেঙে যাওয়া স্থানে মেরামত করা সম্ভব নয়।
মুহুরী ও কহুয়া নদীর ঝুঁকিপূর্ণ আরও কয়েকটি অংশে বাঁধের ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।