পাহাড় ধসে লাশ হল দুই পরিবারের ৫ জন

টানা বৃষ্টিতে কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ বাহারছড়ায় পাহাড় ধসে মাটি চাপা পড়ে দুই পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।

কক্সবাজার প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 July 2015, 04:15 AM
Updated : 27 July 2015, 04:15 AM

সোমবার রাত ২টায় জেলা শহরের দক্ষিণ বাহারছড়ার কবরস্থান পাড়ার রাডার স্টেশন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা জানিয়েছে।

কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের অপারেশন অফিসার কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ দুপুরে সাংবাদিকদের জানান, মাটিচাপা পড়া ৫ জনের লাশ উদ্ধারের পাশাপাশি দুজনকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মাটিচাপা পড়া চারটি বসতবাড়িতে সেনাবাহিনীর একটি দল ও ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের সঙ্গে উদ্ধার কার্যক্রমে ছিল স্থানীয়রাও।

নিহতরা হলেন- খায়রুল আমিনের স্ত্রী জুনু বেগম (২৮) ও তার মেয়ে নীহা মনি (৭) এবং শাহ আলম (৪৫), তার স্ত্রী রোকেয়া আক্তার (৩৩) ও তাদের মেয়ে রিনা আক্তার (৯)।

আহতাবস্থায় উদ্ধার হয়েছেন শাহ আলম (২৮) ও নুরুন নবী (২২) নামে দুজন। তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

কক্সবাজারে গভীর রাতে পাহাড় ধসে ১০/১২ ফুট মাটির নিচে চাপা পড়ে চারটি বাড়ি

কক্সবাজারে গভীর রাতে পাহাড় ধসে ১০/১২ ফুট মাটির নিচে চাপা পড়ে চারটি বাড়ি

গত কয়েকদিন ধরে কক্সবাজারসহ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভারি বর্ষণ চলছে। রোববার কক্সবাজারে ১১৬ মিলিমিটার, কুতুবদিয়ায় ১৭৮ মিলিমিটার, টেকনাফে ১৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। এর মধ্যেই ঘটে পাহাড় ধস।

আহত নুরুন নবী সাংবাদিকদের বলেন, রাত ২টার দিকে বিকট শব্দে পাহাড় ধসে তাদের বাড়ির উপর পড়ে। এতে তারা মাটিচাপা পড়েন।

কক্সবাজার শহর আওয়ামী লীগের নেতা পেটান আলীর ঘরও মাটিচাপা পড়ে। তবে তার পরিবারের সবাই অক্ষত অবস্থায় বের হয়ে আসতে পেরেছেন বলে জানান তিনি।

প্রথমে স্থানীয়রাই উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। পরে ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনী কাজে নামে।

ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা মজিদ বলেন, দুপুর ২টার মধ্যে উদ্ধার কার্যক্রম শেষ হয়। সেনাবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ২ ঘণ্টার চেষ্টায় নুরুন নবীকে জীবিত উদ্ধার করে।

তিনি বলেন, “বসত বাড়িগুলো ১০/১২ ফুটের বেশি মাটির নিচে চাপা পড়ায় এবং ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত উদ্ধার সরঞ্জাম নিতে না পারায় অভিযান শেষ করতে বেশি সময় লেগেছে।”

কক্সবাজারে পাহাড় ধসের পর ফায়ার ব্রিগেড ও সেনা বাহিনী উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়

কক্সবাজারে পাহাড় ধসের পর ফায়ার ব্রিগেড ও সেনা বাহিনী উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়

কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক অনুপম সাহা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমদ, সিভিল সার্জন ডা. কমর উদ্দিন ও সদর থানার ওসি মতিউর রহমান ঘটনাস্থলে যান।

নিহতদের পরিবারকে জনপ্রতি ১৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক।

বৃষ্টির কারণে জেলা প্রশাসন পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের নিরাপদে সরে যেতে রোববার প্রচার অভিযান চালিয়েছিল। নির্দেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছিল। তার মধ্যেই এই ঘটনা ঘটল।