জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবেলায় নতুন জোট ভি২০

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় পারস্পরিক সহযোগিতার অঙ্গীকার নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটানসহ ২০ দেশের নতুন জোট ‘ভালনারেবল টোয়েন্টি’, সংক্ষেপে ভি২০।

আবদুর রহিম হারমাছি লিমা থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 Oct 2015, 07:06 AM
Updated : 9 Oct 2015, 07:06 AM

পেরুর রাজধানী লিমায় বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সভার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগে বৃহস্পতিবার বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিমের উপস্থিতিতে এই জোট গঠনের ঘোষণা আসে।

৭০ কোটি মানুষের এই ২০ দেশের অর্থমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরদের উপস্থিতিতে এই সভায় কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনতে শিল্পোন্নত দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান সভায় বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের লিখিত বক্তৃতা পড়ে শোনান।

বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, অভিবাসী সঙ্কেটসহ আন্তর্জাতিক সমস্যাগুলোর সমাধানে বিশ্বনেতৃবৃন্দের রাজনৈতিক সদিচ্ছার ওপর সবচেয়ে বেশি জোর দিতে হবে।

“আজ যে জোট গঠন হল, এই জোটের সঙ্গে আমরা (বিশ্ব ব্যাংক) আছি। উন্নত দেশগুলো গ্লোবাল ক্লাইমেন্ট ফান্ড গঠন করে সহায়তার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল- এখন তা পূরণ করার পালা।”

গভর্নর আতিউর রহমান পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় বাংলাদেশের অনেক সাফল্যের কাহিনী আছে। আজ আমরা সভায় তা তুলে ধরেছি।”

তিনি বলেন, “আমরা আমাদের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক শিল্পকে, অর্থ্যাৎ বস্ত্র খাতকে ‘সবুজ বস্ত্র খাতে’ পরিণত করতে চাই। পরিবেশের যাতে ক্ষতি না হয় সে লক্ষ্যেই আমরা এ খাতকে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছি।”

পরিবেশের ক্ষতি হয় এমন কোনো শিল্পে ঋণ না দিতে ব্যাংকগুলোকে ইতোমধ্যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান আতিউর।

ভি২০ তে বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, ভুটান, নেপাল, আফগানিস্তান, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম যেমন রয়েছে, তেমনি আছে বার্বাডোজ, কোস্টা রিকা, পূর্ব তিমুর, ইথিওপিয়া, ঘানা, কেনিয়া, কিরিবাতি, মাদাগাস্কার, রুয়ান্ডা, সেন্ট লুসিয়া, তানজানিয়া, টুভালু ও ভাতুয়ানুর মত দেশ।  

এসব দেশের অনেকগুলোই স্থলবেষ্টিত। আবার সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কয়েকটি দেশের বেশিরভাগ ভূ-ভাগ সাগরে হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।  

জোটের সভায় বাংলাদেশের পক্ষে অর্থমন্ত্রীর বক্তব্য তুলে ধরে গভর্নর বলেন, উন্নত বিশ্বকে দায়বদ্ধ করার বিষয়ে জোটের সদস্যদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

জোট গঠনের ভূমিকায় বলা হয়েছে, আফ্রিকা, এশিয়া, ক্যারিবিয়া, লাতিন আমেরিকা ও প্যাসিফিক অঞ্চলের মধ্য আয়, স্বল্পোন্নত এবং ছোট দ্বীপ দেশগুলোর জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় তহবিল গঠন এবং সেই অর্থের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা জোট গঠনের প্রধান উদ্দেশ্য।

নতুন এই জোটের অর্থমন্ত্রীরা বছরে দুই বার মিলিত হবেন এবং উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করবেন।

বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ এর সম্মেলন উপলক্ষে পেরুতে আসা বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল বৃহস্পতিবার বেশ কয়েকটি বৈঠকে অংশ নেন। ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির দেয়া মধ্যাহ্নভোজেও যোগ দেন তারা।

সম্মেলনে অংশ নিতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও ইতোমধ্যে লিমায় পৌঁছেছেন।